এমন এক সময় ছিল যখন মানুষ লেখাপড়া জানতো না কিংবা কম জানতো। যখন থেকে লেখাপড়া শিখেছে তখন থেকে মনের ভাব প্রকাশের জন্য চিঠি লেখা শুরু করে। আর কালের বিবর্তনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে হারিয়ে গেছে সেই চিঠি। এখন আর নেই ডাক পিয়নের ডাকাডাকি। বর্তমানে মানুষ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান করছেন।কিন্তু একসময় চিঠিই ছিল মানুষের তথ্য আদান-প্রদানের এক মাত্র মাধ্যম। এখন কম্পিউটার আর মোবাইলের যুগ। মানুষ যন্ত্রের মাধ্যমে সেকেন্ডের মধ্যে তার প্রিয়জনকে পত্র লিখে পাঠাতে পারছে।
এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি সহ সব ধরনের কার্যক্রম কম্পিউটারেই করে থাকে সাধারণত। পোস্ট অফিস থাকলেও নেই তেমন চিঠি আদান প্রদান। পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। যদিও গত এক যুগ আগেও চিঠির প্রচলন ছিল।
লংগদু উপজেলার মাইনীমুখ ইউনিয়ন এর সোনাই গ্রামের ৬০বছর বয়সী প্রবাসী মজিদ মাতব্বর বলেন, তিন থেকে পাঁচ বছর পর পর দেশে ছুটিতে আসতাম। স্ত্রী সন্তান আর বাবা-মার সাথে কথা বলার জন্য বুকটা ছটফট করতো। কথা বলার কোনো উপায় ছিল না।চিঠির মাধ্যমেই কুশল বিনিময় হতো, তাও আবার একটা চিঠি আসা-যাওয়া করতে সময় লাগতো ১৫ থেকে ২০ দিন। এখন প্রবাসীদের কত সুবিধা, যখন ইচ্ছে তখন সবার সাথে কথা বলতে পারছে আবার ভিডিও কলে দেখাও যাচ্ছে।
লংগদু উপজেলার ইয়ারিংছড়ি এলাকার মহসিন বলেন, ১৯৯৮ সালের দিকে আমি যুবক ছিলাম, প্রেমপ্রীতি ভালোবাসা অনেক করেছি। এখনকার প্রেম আর আমাদের সময়ের প্রেম অনেক আলাদা। বছরের পর বছর প্রেমিকার সাথে দেখা বা কথা হতো না।চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ হতো। প্রতি সপ্তাহে একটি করে চিঠি আসতো, আবার চিঠির মাধ্যমে জবাব দিতাম। আবার আত্মীয়স্বজনদের সাথেও ওই একই উপায়ে যোগাযোগ হতো।
লংগদু উপজেলা সদরের পোস্ট মাস্টার মিজানুর রহমান এলাকার অতি পরিচিত লোক। এলাকার এমন কোন লোক নাই তাকে চিনে না। সেও সবাইকে চিনে। চিঠি এলে সে ডাক দিয়ে চিঠি দিতো, আর যাদের চিঠি আসতো তারাও ডাক দিয়ে জিজ্ঞাসা করতো চিঠি আসছে কিনা। সেই দৃশ্য আর এখন দেখা যায় না।
লংগদু প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা এখলাস মিঞা খান বলেন, ৯০ দশকের দিকে পত্রিকায় নিউজ পাঠাতাম চিঠির মাধ্যমে খোলা ডাকে। চিঠি পেতে ৩ দিন হতে শুরু করে এক সপ্তাহ সময় লেগে যেতো। এখন আধুনিকতার ছোয়ায় মোবাইল ও কম্পিউটারের মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যেই নিউজ চলে যায়। আবার অনলাইনে ৫ মিনিটের মধ্যেই নিউজ প্রকাশিত হয়ে যায়, সেসব এখন শুধুই স্মৃতি।
আপনার মতামত লিখুন :