Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

শেরপুরে হামলা ও প্রাণহানির আশঙ্কায় একটি পরিবার


দৈনিক পরিবার | মিজানুর রহমান সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪, ১০:০৮ পিএম শেরপুরে হামলা ও প্রাণহানির আশঙ্কায় একটি পরিবার

প্রথমে প্রেম। পরে প্রেমের দাবীতে অনশন করে জোরপূর্বক বিবাহ। তারপর বিবাহের দেড় মাস যেতে না যেতেই মেয়ের পরিবার কর্তৃক ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা। তবে আদালতের চলমান মামলাকে উপেক্ষা করে গ্রাম্য মাতব্বরদের বেঁধে দেয়া শর্তে রাজি না হওয়ায় মেয়ের পরিবার কর্তৃক ছেলের পরিবার হামলা ও প্রাণহানির আতঙ্কে ভুগছে ওই পরিবারটি। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও প্রতিকার না পেয়ে আতঙ্কে রয়েছে ছেলের পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের কালাকুড়া গ্রামে।
গ্রামবাসী ও থানায় দায়ের করা বাদীর লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার চাদগাঁও গ্রামের আব্দুল মজিদের মেয়ে মোর্শেদা জাহান(২৩) এর সাথে ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের কালাকুড়া গ্রামের আবু বকর ছিদ্দিকের ছেলে হাবিব উল্লাহ (২৮) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে মোর্শেদা জাহান বিবাহের জন্যে হাবিব উল্লাহকে চাঁপ প্রয়োগ করলে হাবিব উল্লাহ তার পরিবারের অমতে মোর্শেদা জাহানকে বিবাহ করতে বাধ্য হয়।
তাদের বিবাহের মাত্র দেড় মাস যেতে না যেতেই নানা অজুহাতে  আদালতে তিনটি মামলা করে মেয়ের পরিবার।  এই মামলা তিনটির মধ্যে ৭/ ১৭ মামলাটি নিষ্পত্তি হলেও অপর দুটি মামলা চলমান। সেই দুটি মামলার মধ্যে একটিতে আপোষ নিষ্পত্তিকল্পে  দেনমোহরের ধার্যকৃত টাকা  পরিশোধের আদেশ প্রদান করেন আদালত। দেনমোহর বাবদ সমুদয় টাকা এককালীন পরিশোধের সামর্থ না থাকায় আদালতে আর্জি জানান হাবিব উল্লাহ। এদিকে মেয়ের পক্ষ আদালত থেকে এককালীন টাকা পাবেনা মর্মে বুঝতে পেরে আদালতের আদেশকে অগ্রাহ্য করে গ্রাম্য শালিসের আশ্রয় নেয়। সেই গ্রাম্য শালিসে এককালীন ৭লাখ টাকা ৭দিনের মধ্যে মেয়ে পক্ষকে পরিশোধের নির্দেশ দেয় গ্রাম্য মাতাব্বরগণ।
কিন্তু হাবিব উল্লাহ বা তার পরিবার তাদের বেঁধে দেয়া সময়ে সমুদয় টাকা পরিশোধের জন্যে ৩মাসের সময় চায়। তাদের এই সময় চাওয়াকে বাঁকা চোখে দেখে মাতাব্বররা। ফলশ্রুতিতে গত ৩১ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টারদিকে হাবিব উল্লাহর বড় ভাই ও তার বাবা আবু বকর ছিদ্দিক স্থানীয় কদমতলী বাজারে গেলে মোর্শেদার ভাই শহিদুল ইসলাম বাবু(২৩), এনামুল(৩৮), তার বাবা আব্দুল মজিদ সহ সঙ্গীয় আরো লোকজন নিয়ে হাবিব উল্লাহর বাবা ও ভায়ের উপর আক্রমন চালায়। সেই সাথে তাদেরকে বেঁধে রেখে টাকা আদায় করবে, নচেৎ তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। এসময় স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় হাবিব উল্লাহর বাবা ও ভাই বাড়ীতে ফিরে আসে। পরবর্তীতে ৫আগষ্ট দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে হাবিব উল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজনকে বাড়ী থেকে ধরে আনার হুমকি দেয়ার পাশাপাশি কদমতলী বাজারে হাবিব উল্লাহদের দোকানপাটে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দূর্বৃত্তরা।
হাবিব উল্লাহর পরিবারের পক্ষে আবু বকর ছিদ্দিক বাদী হয়ে এসব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে নালিতাবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত আইনত কোন ব্যবস্থা নেইনি পুলিশ। ফলে হামলা ও প্রাণহানির আশংকায় দিনাতিপাত করছে হাবিব উল্লাহর পরিবার।
হাবিব উল্লাহর বাবা আবু বকর ছিদ্দিক জানান, আমি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যেহেতু আদালতে মামলাটি চলমান। সেক্ষেত্রে মেয়ের পক্ষের লোকজন আমার পরিবারকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছে। তাদের হামলার ভয়ে আমি ও আমার পরিবার কদমতলী বাজারে পর্যন্ত যেতে পারছিনা। ওই বাজারে গেলেই নাকি আমাদের বেঁধে রেখে টাকা আদায় করবে? আমি এর প্রতিকার চাই।
এ ব্যাপারে মোর্শেদা জাহানের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, যেহেতু গ্রাম্য শালিসকে হাবিব উল্লাহর পরিবার অগ্রাহ্য করেছে। এর দায় হাবিব উল্লাহর পরিবারের। সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই।
অত্র অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী থানার এসআই আশরাফুল আলম জানান, ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে গ্রামবাসীরা বলছে, উক্ত বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ না করলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় কোন সহিংস ঘটনা।

Side banner