ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী মহলের নিয়ন্ত্রণে চলছিল। যারফলে স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য ব্যবহার করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। প্রভাবশালী এই মহলটির নেতৃত্বে লাইব্রেরির দরজায় নিয়মিত তালা ঝুলিয়ে রাখা হতো এবং শুধুমাত্র নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের মিটিং আয়োজনের জন্যই লাইব্রেরিটি ব্যবহার করা হতো। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বইপ্রেমীরা বই পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সাথে সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা এই লাইব্রেরি উন্মুক্ত করার দাবি জানায়। দেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রসমাজ তাদের দাবিগুলোকে সামনে এনে সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।
এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরির দেয়ালগুলোও শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতি দ্বারা সজ্জিত হয়েছে। গ্রাফিতিগুলোর মাধ্যমে তারা তাদের দাবি ও লক্ষ্যকে প্রকাশ করেছে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও জানিয়েছেন, অতি শীঘ্রই ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
তিনি জানান যে, লাইব্রেরিটি যাতে সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং শিক্ষার্থীরা যেন এখানে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরির ভবিষ্যৎ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন আশা সৃষ্টি হয়েছে। তারা আশা করছে, লাইব্রেরিটি এখন থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই পরিস্থিতিতে ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরির পুনর্গঠন ও নতুন ব্যবস্থাপনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তারা সবাই মিলে একটি উন্মুক্ত ও শিক্ষা-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করার জন্য উদ্যোগী হচ্ছেন।
ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি এখন কেবলমাত্র একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা, সমতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :