Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

মেহেরপুরে চালের বাজারে আগুন!


দৈনিক পরিবার | মাহাবুল ইসলাম আগস্ট ৩, ২০২৪, ০২:৫৯ পিএম মেহেরপুরে চালের বাজারে আগুন!

মেহেরপুরে কাঁচা মরিচ ও সব ধরনের সবজির পর এবার আগুন লেগেছে চালের বাজারে! গত ৩ সপ্তাহে কয়েক দফায় মূল্য বৃদ্ধি হলেও দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সরবরাহ কম এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে চালের মূল্য বৃদ্ধি করেছেন বিক্রেতারা।
এদিকে কাঁচা মরিচ ও সকল ধরনের সবজির মূল্য কিছুটা কমলেও বেড়েছে সকল ধরনের মাছ ও মুরগির মূল্য।
বাজারে ২'শ টাকার নিচে মাছ পাওয়া দুরূহ হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া মুরগির মূল্য জাত ভেদে ২'শ টাকা থেকে শুরু করে ৫'শ ৫০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুরে কারফিউ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও তার প্রভাব পড়েনি চাউলের দামে। গত তিন সপ্তাহ ধরে বাড়তে থাকা চাউলের মূল্য আরেক দফা বস্তা প্রতি বেড়েছে ৫০ টাকা এবং কেজি প্রতি সব ধরনের চাউলে বেড়েছে ৪-৫ টাকা। স্বর্ণা চাউলের ২৫ কেজি বস্তা ১২'শ টাকায় বিক্রি হলেও তা বৃদ্ধি পেয়ে ১২'শ ৫০-১২'শ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২৮ চাউল ১৩'শ টাকায় বিক্রি হলেও তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩'শ ৭০ টাকায়। এছাড়াও পাইজাম, ৭৪, পারিজা, মিনিকেট, বাসমতিসহ সকল ধরনের চাউল এখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ।
মেহেরপুরে চাহিদার অধিকাংশ চাল আসে কুষ্টিয়ার খাজা নগর, বল্লবপুর, আইলচারা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুর থেকে।
এসব এলাকা থেকে আমদানি যারা করে থাকেন তিনারা বলছেন, খাজা নগরেই চাউলের মূল্য বেশি। যা পরিবহন করে এনে কম মূল্যে বিক্রি করা কঠিন।
গাংনী উপজেলার বিভিন্ন দোকানে চাউল সরবরাহকারী খলিশাকুন্ডী বাজারের রাজু স্টোরের স্বত্বাধিকারী জানান, মোকাম থেকেই কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে।
গাংনী চাউল আড়তের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, সব ধরনের চাউলেই কেজি প্রতি ৪-৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আকুবপুর বাজারের চাউল সরবরাহকারী জনি জানান, চাউলের মূল্য অনেক বেশি। প্রতি ২৫ কেজি বস্তার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০-৬০ টাকা।
বামুন্দী বাজারের কয়েকজন চাউল বিক্রেতা জানান, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে চাউল মিলে উৎপাদন বন্ধ ছিলো। তাছাড়া হঠাৎ উৎপাদন শুরু করে প্রয়োজনের তুলনায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে গাড়ি ভাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছে যার প্রভাব পড়ছে বাজারে।
মাইলমারী মুজিব এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী মামুন জানান, গত কয়েকদিনে চাউলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তারপরও যে চাউল আসছে তার অধিকাংশ বস্তাতেই চাউলের সাথে রয়েছে ঘোড়াপোকা। এমনকি বালি মিশ্রিত। যা ৪/৫ বার ধৌত করেও খাওয়ার উপযুক্ত নয় বলে অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের। তাছাড়া ভাত রান্নার পর তা ২/৩ ঘন্টার মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ইসাহাক আলী জানান, ইতিপূর্বে চাউলে সমস্যা না থাকলেও অধিকাংশ ক্রেতা এখন বিভিন্ন অজুহাতে চাউল ফেরত দিয়ে আবার নতুন চাউল নিয়ে যাচ্ছে। চাউল সরবরাহকারীরাও পুরাতন চাউল উঠিয়ে নতুন চাউল সরবরাহ করছেন।
চাউলের মূল্য বৃদ্ধি ও বিভিন্ন সমস্যায় ভাত রান্না করেও অনেক ক্রেতা তা না খেতে পেরে বিকল্প হিসেবে রুটির দিকে ঝুঁকেছেন। তবে বিপাকে রয়েছেন সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষেরা। যারা সকালে খাবার বেঁধে নিয়ে কাজের সাইডে গিয়ে দুপুরের খানা খেয়ে থাকে। খাওয়ার পূর্বেই তাদের ভাত পচে বিনষ্ট হচ্ছে বলে জানান রাজমিস্ত্রী রিপন।
এমতবস্থায় এলাকায় খারাপ চাউল সরবরাহ যাতে না হয় সেদিকে সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান ভুক্তভোগীরা।

Side banner