Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

জকিগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মানববন্ধন


দৈনিক পরিবার | মোঃ হাবিবুর রহমান এপ্রিল ৩, ২০২৪, ১২:৪২ এএম জকিগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মানববন্ধন

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ১নং বারহালের ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত মইলাট জলমহাল ও বিলের নিজ মালিকানাধীন ৬৮.৬৮ একর ও সরকারের খাস খতিয়ানের ৯০.৯০ একর ভূমির জলমহাল ও মালিকানা স্বত্ব নিয়ে আদালতে মামলা মোকদ্দমা চলমান। উপজেলা জকিগঞ্জ, মৌজা:মৈলাট জে এল নং ১৫, দাগ নং -৫ পরিমাণ ৯০.৯০ একর ভূমি যা স্থানীয়ভাবে মৈলাট জলমহাল নামে পরিচিত। পাশাপাশি ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬৮.৬৮ একর ছাড়াও হাজার হাজার একর আউশ, আমন ও বোরো চাষের জমি রয়েছে। নির্যাতিত কৃষকরা স্থানীয় বটরতল বাজারে "কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও" কৃষকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং প্রকৃত চাষী ও মৎসজীবীদের উপর মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করে ও মইলাট জলমাহালের অবৈধ লিজ বাতিলের দাবিতে বিশাল মানববন্ধনে এসব  দাবি জানান স্থানীয় এলাকা বাসী। এসময় মানববন্দনে সরেজমিনে উপস্থিত স্থানীয় ১ নং বারহাল ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, ৬ নং ইউপি সদস্য বুরহান উদ্দিন, ৭ নং ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং প্যানেল চেয়ারম্যান জাবের আহমেদ, ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য ইমাম উদ্দিন। এছাড়াও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এখলাছুর মাস্টার, ছফর উদ্দিন, শাহেদ আহমদ, গিয়াস উদ্দিন, হেলাল আহমদ, জলাল উদ্দিন,  লিটন আহমদ, শামিম আহমদ, লুকু মিয়া, মস্তাক আহমদ চৌধুরী, ফখর উদ্দিন, আইন উদ্দিন মেম্বার ও আজির উদ্দিন সহ নেতৃবৃন্দ প্রমুখ। এছাড়া বৃহত্তর বারহাল ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তারা দাবি করেন, উক্ত জলমহালটি প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে অবৈধভাবে লিজ গ্রহণ করে অবৈধ পন্থায় মাছ নিধনে মেতে উঠেছে একটি কুচক্রীমহল। মৎস্যজীবী সমিতির নাম সাইনবোর্ড হিসাবে ব্যবহার করে কৃষকদের জিম্মি করে জলমহালটি একটি অসাধু চক্র ব্যবহার করতে চায়। এতে কৃষকরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের দাবি, মৈলাট মৌজার জেল নং ১৫ এস এ নং ৫ পরিমান ৯০.৯০ একর ভূমি সূদীর্ঘকাল থেকে সরকারের খাজনাদি ও অন্যান্য টেক্স পরিশোধ পূর্বক ভোগদখল করা অবস্থায় জেলা জলমহাল কমিটি বিগত ২০১১ সালে বিলটি ইজারা প্রক্রিয়া গ্রহণ করলে ৪৪৮ জন গং বাদী হয়ে জেলার বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা নং ১৫/২০১২ দাখিল হয়। বর্তমানে মামলাটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। এখনও নিষ্পত্তি হয়নি ভূমি মন্ত্রণালয়ের ইজারা সংক্রান্ত এক পত্রের ৩ এর খ ধারা মোতাবেক কোন মামলায় কোনরুপ নিষেধাজ্ঞা /স্থগিতাদেশ থাকলে গৃহীত ইজারা প্রদানের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না। প্রাকৃতিকভাবে মাছের বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিটি জলমহালের একটি নির্দিষ্ট স্থানকে নির্ধারণ করতে হবে যেখানে সারা বছর পানি থাকে ও মা মাছ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে এবং কোন অবস্থাতেই এই নির্দিষ্ট স্থানে মাছ ধরার জন্য জাল টানা যাবে না। এসব কোন আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে শর্ত ভঙ্গকরে বাঁধ কেটে সম্পূর্ণ পানি শুকিয়ে মাছ নিধন করে যাচ্ছে। ফলে দিনদিন কৃষকরা ফসল ফলাতে না পারায় দেউলিয়া হচ্ছে ভিটে মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে। বোরো মৌসুমেও ধান চাষ করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার কৃষক। এছাড়া বিলুপ্ত হচ্ছে মুক্ত জলাশয়ের মাছ, দেশ হারাচ্ছে দেশীয় মাছের প্রজননক্ষেত্র। আদালতের নিষেধাজ্ঞা / স্থগিতাদেশ থাকার পরও সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে জলমহালটি লুটপাট করে খাচ্ছে। এটি আদালত অবমাননার শামিল। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশ থাকায় সিনিয়র অফিসারদের নজরে আসছে না। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত এই অবৈধ লিজ বাতিল ও জলমহাল সীমানা নির্ধারণ না করলে এখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে, বহু লোকের প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের নিরবতার কারণে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

Side banner