Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২
ভারতীয় বিএসএফের হাতে আটক 

চিলমারীর মৎসজীবী পরিবারের মানবেতর জীবন যাপন


দৈনিক পরিবার | হাবিবুর রহমান এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ০৪:২১ পিএম চিলমারীর মৎসজীবী পরিবারের মানবেতর জীবন যাপন

কুড়িগ্রামের চিলমারীর মৎস্য শিকারীরা ভারতীয় মৎস্য শিকারীদের প্ররোচনায় পরেছেন, তারা মৎস্য শিকারের জন্য ভারতে যাওয়ার সময় গত ৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে বিএসএফ এর হাতে আটক হয়েছেন। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার ৭জন মৎস্য শিকারী, তারা এখন ভারতের জেল-হাজতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলে জানা গেছে। 
আমপাতি জেলার মাহিন্দগঞ্জ থানার তুরা মেঘালয় থানা থেকে ছাড়া পাওয়া, বাংলাদেশী এক আসামীর কাছে দেয়া চিরকুটে উক্ত জেল-হাজতে আটকে থাকা মীর জাহান তার স্ত্রীর কাছে জানিয়েছে। এই এপ্রিল মাসের মধ্যে তাকে জেলখানা থেকে উদ্ধার না করতে পারলে, তার স্থায়ী ভাবে সাজা হয়ে যাবে। 
অপরদিকে ৭ জেলের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও মা বাবাসহ পরিবারে লোকেরা বর্তমানে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর দিন যাপন করছেন। 
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী এক পরিবারের লোক আমির আলীর স্ত্রী জোসনা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তার স্বামী মৎস্য শিকারের জন্য এলাকার মৎস্যজীবিদের সাথে পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে ভারতীয় সীমান্তে মাছ শিকার করতে যায়। তখন তারা ভারতীয় বিএসএফ এর হাতে আটক হয়েছেন। এছাড়াও রাসেল মিয়া (৩৫) পিতাঃ মৃত আবুল হোসেন, বিপ্লব মিয়া (৪৫), পিতাঃ বাহাদুর মিয়া, মীর জাহান (৪৫) পিতাঃ শামছুল হক, বকুল মিয়া (৩৫) পিতাঃ মৃত এছাহক আলী, আঙ্গুর আলী, পিতাঃ জরিপ উদ্দিন, চাঁন মিয়া, পিতাঃ ছলিম উদ্দিন। তাদের সকালের বাড়ি রমনা মিস্ত্রি পাড়া গ্রামে। 
তাদের সকলের পরিবার পরিজনের সাথে কথা হলে তারা সবাই বলেন, গত নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ বাড়ী থেকে ভারতে রওনা হন। তার পরদিন ৪ নভেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে তারা সীমান্তে বিএসএফ এর হাতে আটক হয়েছেন। তারা এখন মেঘালয়ের কালাইর চর পেট্রোল থানা আমপাতিতে রয়েছেন। ৭ টি নিরীহ পরিবার পরিজনের পক্ষ থেকে এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যান, ইউএনও ও ডিসি মহোদয় বরাবর আবেদন করলে তারা ওই সকল পরিবারের মাঝে নগদ কিছু টাকা ও চাল বিতরন করেছেন। কিন্তু সকল মৎস্য শিকারীদের উদ্ধারের জন্য এখন পর্যন্ত কোন প্রকার পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মা-বাবা, স্ত্রী ও সন্তানরা তাঁদের বাবাকে ফিরে পেতে বেকুল হয়ে আছেন। 
উক্ত পরিবার গুলোর একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তি ছিল তারা, কিন্তু দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস বাড়ীতে না থাকায় পরিবার, পরিজনরা অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। এমনকি ছেলে মেয়েদের লেখা-পড়াও প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছেন। এসব ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় তারা হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। তারা যে কোন ভাবেই হোক ভারতের জেলখানা থেকে আটক থাকা ৭ জনকে ছাড়িয়ে আনার জন্য, বর্তমান অন্তরবর্তীকালীন সরকারের নিকট করুণ আকুতি জানিয়েছেন। 
এ ব্যাপারে রমনা মডেল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুকুনুজ্জামান স্বপন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। রমনা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আঁকা বলেন, ভুক্তভোগীদের যাবতীয় সহযোগিতা করতে আমরা চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। 
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্ঠা চলছে। ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে ইতিপুর্বে জেলা প্রাশাসকের পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে ৫০০০/-(পাঁচ হাজার) টাকা এবং উপজেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০০০/-(দুই হাজার) টাকা প্রদান করা সহ চাল সরবরাহ করা হয়েছে। 
বিষয়টি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রনালায়ের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনরা। 

Side banner