Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

গাইবান্ধায় ইটভাটা মালিক শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল


দৈনিক পরিবার | শাহিন নুরী মার্চ ১১, ২০২৫, ০৭:৪৮ পিএম গাইবান্ধায় ইটভাটা মালিক শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল

গাইবান্ধায় অবৈধ্য ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট, জরিমানা ও ভাংচুরের প্রতিবাদে গাইবান্ধার ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা একত্র হয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। মঙ্গলবার গাইবান্ধার জেলার সব ইট ভাটার হাজার হাজার শ্রমিক ও মালিকরা একত্র হয়ে জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.কে.এম হেদায়েতুল ইসলাম।
গাইবান্ধা জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। স্মারকলিপি প্রদান পূর্ব জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে সমাবেশে বক্তব্য দেন মেসার্স এবিডি ব্রিকসের স্বত্ব্বাধিকারী আকতার আমিন বাবলা, ফ্রেন্ডস্ ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী খাদেমুল ইসলাম জুয়েল, এমএসবি ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী নওশের আলম ও আনোয়ারুল কাদির ফুল মিয়া প্রমুখ। 
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গাইবান্ধাসহ সারাদেশে ইট ভাটা মালিকরা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের হয়রানির শিকার। এই খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। অথচ নানা অজুহাতে ইট ভাটাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। তারা অবিলম্বে হয়রানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। 
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পূর্বে ইট ভাটার দূষণমাত্রা ছিল ৫৮ শতাংশ, বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে ৫ থেকে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিদ্যমান জিগজাগ ইটভাটায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। উপরন’ ইট ভাটায় কর্মরত ৫০ লাখ শ্রমিক ২ কোটি মানুষের রুটি রুজির সংস্থানন করছে। এছাড়াও ইট ভাটা থেকে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হচ্ছে। কিন্তু ইটা ভাটা মালিকদের মাঝে মাঝেই হয়রানি করা হয়, ইট ভাটা ভেঙে দিয়ে জরিমানা করা হয়। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ান হাসান অত্যন্ত আন্তরিক হলেও বর্তমানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে জিগজাগ ইট ভাটার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ইট ভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা, ইট ভাটায় হয়রানি ও মোবাইল কোর্ট বন্ধ, মাটি কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার বিধান বাতিল, ইট ভাটা পরিচালনায় দীর্ঘ মেয়াদী পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি নবায়নের সময় কেন্দ্রীয় ইট প্রস্ততকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলক বিধান করার উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানানো হয়। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ জরুরী মিটিং এর কারণে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার অফিসে ব্যস্ত থাকায় তার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ.কে.এম হেদায়েতুল ইসলাম। স্মারকলিপি গ্রহণ কালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ.কে.এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন আইনের উদ্ধে আমরা কেউ না। সরকার আমাদেরকে যে নির্দেশনা প্রদান করেন আমরা সেই নির্দেশনায় মাঠ পর্যায়ে পালন করি মাত্র। যেহেতু হাইকোর্ট অবৈধ ভাটা উচ্ছেদের জন্য নির্দেশনার জারি করেছেন তাই আদালত কে সম্মান প্রদান করে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। কিন্তু আপনারা এভাবে বিক্ষোভ ও ক্ষুব্ধ হয়ে একসঙ্গে জেলা শহরে এসে যে প্রস্তাবনা দিলেন আমরা দ্রুত আপনাদের স্মারকলিপি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পৌঁছে দিব। সরকার যে নির্দেশনা প্রদান করবেন আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য থাকিব। তবে আপনাদের বিষয়গুলো বিবেচনা পূর্বক আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিব। 
ভাটা মালিকরা বলেন, গাইবান্ধা কোন শিল্পকারখানা নেই অধিকাংশ শ্রমিক পেটের দায়ে ভাটায় কাজ করে থাকে, তাদের জীবন জীবিকা রুটি রুজির ব্যবস্থা এই ভাটা থেকে হয়। তাই এই বছর আর যাতে অভিযান না হয় এ ব্যাপারেও জোরালো আহ্বান জানানো হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( সার্বিক) বিষয়টি নিয়ে  আশ্বস্ত করে বলেন  আমরা অতীব জরুরি গাইবান্ধার ভাটার শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে দ্রুত  অগ্রসর হব ইনশাআল্লাহ। আপনারা অন্তত এ ব্যাপারে শান্ত থাকেন। জেলা প্রশাসক মহোদয় আসলে আমরা  অন্তবর্তী কালীন সরকারের  সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। অবশ্যই ইনশাল্লাহ  একটা সমাধান বের হয়ে আসবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) এর কথা অনুযায়ী শ্রমিক মালিক শান্ত হয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যান।

Side banner