জনবল সংকটে শ্রমিকদের কাঙ্খিত সেবা মিলছে না গাইবান্ধার শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে। সেবা প্রত্যাশী শ্রমিকদের আনাগোনা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বর্তমান দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারীগণ।
জানা যায়, উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় প্রায় ২৫ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এ জেলায় সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা, প্রশিক্ষণ ও বিনোদনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র।
দীর্ঘ সময় অস্থায়ী ভবনে কার্যক্রম চললেও ২০২১ সালে জেলা শহরের গোডাউন রোডে ২ একর জমির ওপর নতুন করে নির্মাণ করা হয় তিন তলার একটি আধুনিক ভবন। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় শ্রমিকদের তেমন কোনও কল্যাণে আসছে না এ কেন্দ্রটি। অথচ প্রতিবছর এ কেন্দ্রের জন্য চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ ও বিনোদনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জন্য চিকিৎসা সেবা, প্রশিক্ষণ নেওয়া, বিনোদনসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিতে এ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হলেও এখানে নেই সেবা প্রত্যাশী শ্রমিকদের আনাগোনা। ফলে নিরব নিস্তব্ধ এ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অলস সময়ের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এতে করে অনেক শ্রমিকই জানেন না এ কেন্দ্রের কাজ কি? বা এখান থেকে কি কি সেবা মিলতে পারে।
গাইবান্ধা শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের অফিস সূত্রে জানা যায়, এই কেন্দ্রে ১২টি পদ থাকলেও দীর্ঘ সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ ৪টি পদ শুন্য রয়েছে। পদগুলো হচ্ছে, মেডিক্যাল অফিসার, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা, শ্রম কল্যাণ সংগঠক ও পরিদর্শিকা।
সরেজমিন গাইবান্ধা শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা যায়, অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে তিন তলা ভবনটির নিচতলার একপাশে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র, অন্যপাশে পরিবার-পরিকল্পনা সেবা কেন্দ্র। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে প্রশিক্ষণ কক্ষ, বিনোদন কক্ষ, লাইব্রেরি, দর্শনার্থী কক্ষ, বিশ্রামাগার এবং তৃতীয় তলায় কনফারেন্স রুম আর অফিস কক্ষ। পুরো ভবন জুড়ে সুনসান নীরবতা। নেই কোনও শ্রমিক অথবা শ্রমিক পরিবারের আনাগোনা। কেন্দ্রে যেসব সেবা কার্যক্রমগুলো চালু থাকার কথা জনবল সংকটে সেসব সেবা চালু না থাকায় এখানে শ্রমিকরা আসছেন না।
হোটেল শ্রমিক বাবলু ও রন্জুসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, প্রায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আমরা ভ্যান-রিক্সা চালাই। গাইবান্ধা শহরে আমাদের জন্য চিকিৎসা সেবা, খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে সেটা আমাদের জানা নেই। এ ধরনের সুযোগ সুবিধা পেলে আমাদের মতো গরীব মানুষদের অনেক উপকার হতো।
এ কেন্দ্রর শ্রম কল্যাণ সংগঠক নাছির উদ্দিন জানান, জনবল সংকটের বিষয়টি বহুবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা মিলছেনা। ফলে মন্থর গতিতে চলছে কেন্দ্রের কার্যক্রম।
সচেতন মহলের দাবী, দ্রুত শুন্য পদগুলো পূরণ পূর্বক গতি ফেরানো হোক সেবার মানের। কাঙ্খিত প্রত্যাশা সফল হোক শ্রমিকদের।
আপনার মতামত লিখুন :