নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৩ টি পরিবারের অন্তত ৩২ টিরও বেশি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়াও আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ থেকে ১২টি পরিবার। এ ঘটনায় নিঃস্ব হয়েছে পরিবারগুলো।
সৈয়দপুর উপজেলার ২ নং কাশিরাম বেলপুকুর ব্রহ্মত্তরে এলাকার গত সোমবার সন্ধ্যা সাতটার এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৩২টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং গবাদিপশু সহ ব্যাপক ক্ষতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকার ক্ষতির সম্ভাবনা করা হচ্ছে, যার মধ্যে গবাদিপশু ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি রয়েছে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ সময়ের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যায় শর্ট সার্কিট থেকে ঐ এলাকার নয়ন ইসলাম শুখু বাড়ি থেকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। পরে তীব্র গতিতে সেই আগুন আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কোনওমতেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। পরে সৈয়দপুর ও তারাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ততক্ষণে এলাকার ১৩টি পরিবারের ৩২টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য সরকারি সাহায্যের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ওই এলাকায় অত্যন্ত অসহায় ও নিরীহ। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এ ক্ষতি সহজে কাটিয়ে উঠতে পারবে না বলে জানান এলাকাবাসী।
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা তারাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার রহমত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করি এবং উদ্ধার কাজ করি। জনগণের ভিড়ে এখানে সবচেয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছি। রাস্তা সরু হওয়ায় আমাদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে একটু সময় লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের একটি ইউনিট ও সৈয়দপুরের একটি ইউনিট কাজ করে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডে শোয়ার ঘর, গোয়াল ঘর, খড়ে ঘর ও রান্না ঘর গরু ছাগল হাস মুরগির পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকেই। কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লানচু হাসান চৌধুরী বলেন, আগুনের ভয়াবহতায় ১৩ টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কম্বল ও শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উদ্ধারকাজে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি সৈয়দপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ অংশ নেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফইম উদ্দীন জানান, শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত বলে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :