Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১
অর্থাভাবে জোটেনি উন্নত চিকিৎসা

দুই প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চারদেয়ালের মাঝে


দৈনিক পরিবার | নওগাঁ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ১০:১৯ পিএম দুই প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চারদেয়ালের মাঝে

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর স্কুলপাড়ায় দুইজন প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চারদেয়ালের মাঝে। শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া কিছুই জোটেনি তাদের ভাগ্যে। গরীব পরিবারের সন্তান হওয়ায় অর্থাভাবে সন্তানের জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাও করাতে পারেনি পরিবার। ফলে দু’জন প্রতিবন্ধীর জীবন এখন চারদেয়ালের মাঝে বন্দি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর প্রাথমিক স্কুলপাড়ার দিনমজুর নয়ন প্রামাণিকের প্রতিবন্ধী ছেলে আকাশ কুমার প্রামাণিক। আকাশের জন্ম ১৯৯৬ সালে। জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী তিনি। অর্থাভাবে ছেলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে পারেনি আকাশের পরিবার। তাই ২৮টি বছরের বেশি সময় একটি পরিত্যক্ত ঘরেই জীবন কাটছে আকাশের। ঘরেই প্রসাব-পায়খানাসহ খাবার গ্রহণ সবই করতে হয় আকাশের। শুধুমাত্র ঘরের একটি ছোট্ট জানালা দিয়ে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে বাহিরের আকাশ ও পরিবেশকে দ্যাখেন।
আকাশের মা অলোকা রানী জানান, উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তোবা আকাশ সুস্থ্য হয়ে উঠতো। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ পরিবারের অন্য সদস্যদের পেটের ভাত জোটাবো, নাকি আকাশের উন্নত চিকিৎসা করবো। শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতাটুকুই পায় আকাশ। এছাড়া শীতের কম্বল কিংবা অন্য কোন সহায়তাই আমার ছেলের ভাগ্যে জোটে না। যদি আকাশের উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পেতাম তাহলে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করতাম।
আকাশের বাড়ির পশ্চিম দিকে- আরেক প্রতিবন্ধী ছেলে দীপনম সূত্র। সেও জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২০০৬ সালে জন্ম নেওয়া দীপের বাবা একজন ভ্যান চালক। দীপনম সূত্রকে হুইল চেয়ার করে একস্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়া যায়। দীপও শুধুমাত্র চেয়ে চেয়ে দেখে। উন্নত চিকিৎসা পেলে দীপও সুস্থ্য হয়ে উঠতে পারে এমনটিই মনে করছেন দীপের পরিবার।
দীপনম সূত্রের মা চন্দনা নমসূত্র জানান, দীপ প্রথম সন্তান। দীপ প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ার পর গরীব মানুষ হিসেবে চেষ্টা করেছি চিকিৎসা করাতে। কিন্তু ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ আমাদের পক্ষে যোগানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই উন্নত চিকিৎসার আশা ছেড়ে দিয়েছি। শুধু প্রতিবন্ধী ভাতাটুকু পায় দীপ। সরকারের অন্য কোন সহযোগিতা এখনো দীপের ভাগ্যে জোটেনি। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেলে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করতাম। উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো দীপ কিছুটা সুস্থ্য হয়ে উঠতো।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম কচি বলেন, ওই দু’জন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে। আগামীতে উন্নত চিকিৎসার কোন সুযোগ-সুবিধা আসলে, তাদের জন্য সেই সুযোগ প্রদান করার চেষ্টা করবো। এছাড়া আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে নানা সময়ে আসা বিভিন্ন সুবিধাও ওদের দিতে চেষ্টা করবো।

Side banner