Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১
খাবার জুটে ভিক্ষা করে

বাঞ্ছারামপুরে একই পরিবারে চারজনই প্রতিবন্ধী


দৈনিক পরিবার | সালমা আহমেদ  ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ০৯:২২ পিএম বাঞ্ছারামপুরে একই পরিবারে চারজনই প্রতিবন্ধী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছলিমাবাদ ইউনিয়নের আশ্রাফবাদ গ্রামের একই পরিবারে ৪ জন প্রতিবন্ধী'র সন্ধান পাওয়া গেছে। "প্রতিবন্ধী বাড়ি" হিসেবে এলাকাটিতে পরিচিত এই পরিবারটি। সেলিনা বেগম (৩০), জাহাঙ্গীর আলম (২৭), মো. আল আমিন (২৫), শান্তনা আক্তার (২০) এই চারজনই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী হয়েছেন। ফলে পুরো পরিবারটি চরম দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। 
আশ্রাফবাদ গ্রামের মৃত ফরিদ মিয়ার ৫ সন্তানের মধ্যে ৪ জনই প্রতিবন্ধী। তাদের মধ্যে ২ মেয়ে ও ২ ছেলে প্রতিবন্ধী। মা নয়নতারা বেগম জানান, আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে সেলিনাকে মৌমাছি কামড়েছিল। এরপর থেকে তার পা ফুলে যায়, চিকিৎসা করতে না পারায় সেলিনা অসুস্থ হয়ে পড়ে। জাহাঙ্গীরের বয়স যখন ১৭ বছর তখন তার টাইফয়েট হয়েছিল। এরপর তার দুই পা বাঁকা হয়ে যায় এবং কোমর চিকন হয়ে যাওয়ার কারণে হাঁটা সম্ভব হচ্ছে না। আল আমিনের বয়স যখন ৮ বছর তখন সে বাঁশের কঞ্চিতে গুঁতো খেয়ে হাত-পা অবশ হয়ে যায়। তখন থেকে আর চলাফেরা করা সম্ভব হচ্ছে না। রামিয়া আক্তার ৬ বছর বয়সে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। 
জাহাঙ্গীরের বিয়ে করার পর ১টি মেয়ে হয়েছে, সেও বোবা। অর্থের অভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করতে না পারার কারণে তারা এখন শারীরিক প্রতিবন্ধী। নানা রকম অসুখ-বিসুখে ভুগছে তারা। প্রায় ১০ বছর আগে পিতা মারা যাওয়ার পর চিকিৎসা করানো তো দূরের কথা, তিন বেলা খাবার যোগাড় করাই সম্ভব হচ্ছে না। হুইল চেয়ারে বসে মানুষের বাড়ি, কখনো হাটবাজারে ভিক্ষা করে যা পায় তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চলে। সাড়ে ৮ শ টাকার ভাতা দিয়ে এই উচ্চ মূল্যের বাজারে কিছুই হয় না।
ছোট ও ভাঙা চুড়া একটি দু'চালা ঘরে ৫ সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে বলে জানান মা নয়নতারা বেগম।
সবার ছোট প্রতিবন্ধী শান্তনা বলেন, আমার কষ্ট কেউ বুঝবে না। এই বয়সে স্বামী সংসারের পরিবর্তে ভাইদের ভিক্ষার উপর ভর করতে হয়। আমাকে সরকার প্রতিবন্ধী ভাতাও দেয় না। আমরা গত সরকারের আমলে একটি ঘরও পাইনি।
প্রতিবেশী কাশেম মিয়া বলেন, পরিবারটির সত্যিকার অর্থে সহায়তা দরকার। বৃষ্টি হলে ঘরের টিন বেয়ে পানি ঝড়ে। তাদের একটি গোসলখানা নেই।
 বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন মুঠোফোনে আজ (শনিবার) জানান, পরিবারটির কথা আমি জানি। ওদের জন্য কি কি করা যায়, কাল (রবিবার) অফিস খুললে দেখবো। তবে, মাসে ৮'শ ৫০ টাকা করে ৩ জন ভাতা পায় বলে জেনেছি।
প্রতিবন্ধীদের মা নয়নতারা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমাদের দু'বেলা দুমুঠো ভাত খাওয়ার জন্য দয়া করে সবাই এগিয়ে আসুন।

Side banner