ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের কানাইনগরে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ৪টি শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন জব্দ করেছেন উপজেলা প্রশাসন।
এসময় অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন নরসিংদীর মো: শাহিন মিয়া (৩২), মাধবদীর মো: আব্দুল্লাহ (২৪), মেহেন্দীগঞ্জের মো: সোহাগ (২০), কানাইনগরের মো: নিরব মিয়া (১৯)। বয়স কম বিধায় ২ জন তরুণকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের কানাইনগর বাজারের পশ্চিম পাশে মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলনের সময় অভিযান পরিচালনা করে বড় আকৃতির উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৪টি মেশিন জব্দ করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান পরিচালনা করেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফেরদৌস আরা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো বালু দুস্যরা। বালু উত্তোলনের কারণে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি দিন দিন নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। জমির মালিকরা তাদের কিছু বললে উল্টো মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানী করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বালুদস্যুরা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাঞ্ছারামপুর এসে বহুদিন ধরে প্রভাব খাটিয়ে দৈনিক ১০ হতে ১৫ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে দিতো। মাসে তারা প্রায় কোটি টাকা অবৈধ আয় করতো। তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করে না স্থানীয়দের কেউই। এমনকি পুলিশ, সাংবাদিক কেউ তাদের কাছে যেতে পারেনা। তাদের অনেকই সশস্ত্র অবস্থায় থাকে বলে জানা গেছে। এই ভয়ংকর বালুদস্যুদের ভয়ে বিগত দুই বছর ধরে বাঞ্ছারামপুর সীমানায় কেউ জলমহাল বা বালু উত্তোলনের ইজারা দেয়া যাচ্ছিলো না। এতে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
অবাক করার বিষয় হলো, তাদের যে টাকা জরিমানা বা মোবাইল কোর্টের সাজা দেয়া হোক না কেনো, তারা সেটি অবলীলায় দিয়ে দেয়। সাজা হলে জামিনে এসে ফের সংঘবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস আরা বলেন, অভিযান পরচালনা করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা হবে। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। অভিযানে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা ও নৌ পুলিশ উপস্থিত ছিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নজরুল ইসলাম বলেন, আজ মোবাইল কোর্টে বালুদস্যুতার কারনে ৪টি ড্রেজার জব্দ ও ৪ জনকে ১৫ দিনের সাজা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, জব্দকৃত ড্রেজারগুলোর প্রতিটির বাজার মূল্য ৫০ লাখ হতে ৬০ লাখ টাকা।
আপনার মতামত লিখুন :