দল বেঁধে নারী-পুরুষেরা নতুন সেভেন জাতের আলু উঠাচ্ছেন। টুকরি ভর্তি হচ্ছে। টুকরি ভর্তি হওয়া পর আবার বস্তায় ভর্তি করা হচ্ছে আলু। সারি সারি আলুর বস্তা জমিতেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। মাত্র ৬২ দিনেই সেভেন জাতের নতুন আলু ক্ষেত থেকে হারভেস্টিং করতে পেরে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন চাষীরা।
আলু চাষী আরিফুল ইসলাম দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। চলতি বছরের জুন মাসে স্থানীয় শিংমারি চরের জমির মালিকের নিকট থেকে এক বছরের জন্য ৪৮ শতক জমি ৩৩ হাজার টাকায় লেজ গ্রহণ করেন তিনি।
জমি লিজ গ্রহণ করার পর আরিফুল ইসলাম এই ৪৮ শতক জমি চাষ করতে খরচ হয়েছে। জমির লিজ বাবদ প্রথম আবাদের জন্য ১১ হাজার টাকা। জমি চাষ ৩ হাজার টাকা, গোবর সার ২ হাজার ৬০০ টাকা, রাসায়নিক এমওপি, ডিওপি, টিএসপি ও, ইউরিয়া সার সব মিলে ৮ হাজার টাকা। আলুর বীজ ৩৭ হাজার ২ শত টাকা, কীটনাশক ৪ হাজার ৫ শত টাকা। পানির সেচ ২ হাজার টাকা। আলুর বস্তা ৩৬০০ টাকা এবং শ্রমিক খরচ ২ হাজার ৭ শত টাকা, পরিবহন খরচ ৩ হাজার সব মিলে তার খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার ৬০০ টাকা। খরচ বাদ দিলে ৬২ দিনেই তার লাভ হয়েছে ৪৮ শতক জমি থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা।
আলু চাষী জলিল মিয়া জানান, আমরা দুই ভাই মিলে আলু চাষ করেছি। বাবার তেমন জমি নেই। লিজ নেওয়া জমিতে দুই ভাই মিলে এই আলু চাষ করেছি। বড় ভাইয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমি জমিতে পরিচর্যা করেছি এবং এই অল্প সময়ের মধ্যে আলু উৎপাদন করতে পেরে আমরা লাভবান হয়েছি। পাশাপাশি এই অঞ্চলের কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ও সুযোগ হয়েছে। আজকে আমাদের এই আলু জমিতে ১০ জন নারী শ্রমিক কাজ করছে। তারা প্রত্যেকেই ৩০০ টাকা করে হাজিরা পাবে। এতে করে তারা ও লাভবান হচ্ছে। যেহেতু এই অঞ্চলে এখন কেমন কাজ নেই। এই নারীরা ৩০০ টাকা করে আয় করলেও তাদের সংসারে কাজে লাগছে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নুরুজ্জামান বলেন, এ বছর দিনাজপুর জেলায় ৪৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ হেক্টর। এবার প্রতি হেক্টর জমিতে ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এ বছর আলু আমাদের অনেক ভালো হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও আলুর উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করছি। তবে এবছর আগাম উন্নত সেভেন জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে করে কৃষকেরাও লাভবান হচ্ছে ভোক্তারা নতুন আলু পাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :