Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

অদম্য সাহস নিয়ে ধুধু বালুচরে স্বপ্ন বুনছেন ফুলবাড়ীর কৃষকেরা 


দৈনিক পরিবার | বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৪:১৭ পিএম অদম্য সাহস নিয়ে ধুধু বালুচরে স্বপ্ন বুনছেন ফুলবাড়ীর কৃষকেরা 

নদীর বুকে ধূ-ধূ বালুচরে চাষাবাদ সম্ভব? হ্যাঁ, নিজেদের জীবন জীবিকায় টিকে থাকতে অসম্ভবকে সম্ভব করার অদম্য সাহস নিয়ে ধূ-ধূ বালুচরে স্বপ্ন বুনছেন ফুলবাড়ীর কৃষক।
দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা ফুলবাড়ী। এ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টির গা ঘেঁষে বয়ে গেছে ধরলা নদী। বয়ে চলার খেয়ালিপনায় নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ধরলা কখনো আশীর্বাদ কখনো বা অভিশাপ হিসেবে আভির্ভূত হয়। গত কয়েক বছর ধরে দফায় দফায় বন্যা আর ধরলার তীব্র ভাঙনে দূর্যোগ নেমে এসেছে মানুষের জীবন জীবিকায়। বন্যা ও ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের কাছে ধরলা এখন অভিশাপ।
বর্ষায় টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় প্রতি বছরই ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে হয় উপজেলার নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের হাজার হাজার বাসিন্দাদের। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দেখা দেয় নতুন দূর্যোগ। এবারে আগ্রাসী রূপে হানা দেয় ধরলার তীব্র ভাঙন। ধরলার তীব্র ভাঙনে ফসলি জমি এখন ধূ-ধূ বালুচর। জীবন জীবিকায় টিকে থাকতে বালুচরে চাষাবাদ করে ফসল ফলানোর সংগ্রামে নেমেছেন চরাঞ্চলের অনেক কৃষক। বালুচরেই তারা ভুট্টা চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন।   
উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকেরা নদীর বুকে বালুচরে ভুট্টা চাষাবাদ করছেন। 
বড়ভিটার কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, আমার সব ধানিজমি নদীর পেটে চলে গেছে। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর নদীতে চর পরেছে। আমার আর কোন জমি নাই এখন নিরুপায় হয়ে বালু জমিতে ভুট্টা আবাদ করছি। একই এলাকার রহমত আলী বলেন, আমার ১০ বিঘা জমির মধ্যে ৯ বিঘাই নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন মাত্র ১ বিঘা জমি আছে। তা ও বালুচর। তাতেই বীজ সার কিনে ভুট্টা চাষাবাদ করছি। 
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম জানান, বন্যার কারণে জমিতে বালু পড়েছে। সেই জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ করছেন। জমিতে বীজ বপনের প্রায় ৩০ দিন হয়েছে। আপাতত খেতের অবস্থা ভালোই দেখা যাচ্ছে। 
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন জানান, গত বছর ভুট্টার ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এবারে ভুট্টা চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকেরা ভুট্টা বীজ বপন কাজ শেষ করেছেন। এবছর ৩৫০জন  কৃষককে ভুট্টা বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে যাতে ভালো ফলন হয়।

Side banner