প্রকৃতি শীতের আগমনী বার্তা জানান দিতে শুরু করেছে। গ্রাম অঞ্চলে সন্ধ্যা হলেই শীত অনুভূতি হয়। সকালে দেখা মিলছে ঘন কুয়াশা ও শিশিরের। শীত শুরু হলেই গ্রামীণ জনপদের মাঠে ময়দানে রাস্তাঘাটে খেজুর গাছে দেখা মেলে গাছির। একজন গাছি খেজুর গাছকে সুন্দর করে পরিষ্কার করে গাছের বুক চিরে রস বের করে। সুস্বাদু এই রসের চাহিদা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শীত যত বাড়ে খেজুর রসের চাহিদা তত বাড়ে। অবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলা ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার সুতর ইল মোড়ে গিয়ে দেখা যায় গাছিরা গাছ থেকে রস নামিয়ে আগুনে জাল দিয়ে তৈরি করছে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালির গুড়। শীত মৌসুমের এই সময়টাতে রস সংগ্রহের কাজের চাপে যেন দম ফেলার সময় নেই গাছিদের।
পোরশা অঞ্চলে খেজুর রসের ব্যাপক চাহিদা আছে। এখানে এক কেজি রস বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি আর খেজুরের লালি ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই খেজুর রস খেজুর গাছের বুক চিরে সাদা অংশ বের করে একটি বাঁশের জীবা তৈরি করে গাছে লাগিয়ে মাটির পাত্র কলসি বেধে সকাল ও সন্ধ্যা রস সংগ্রহ করে।
বর্তমানে খেজুর রস থেকে নিপা ভাইরাস নামক একটি রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ডাক্তার মোহাম্মদ জুবায়ের হোসেন বলেন, ৭০ থেকে ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটিয়ে খেতে পারলে নিপা ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা অনেকাংশে কম থাকে। তাই নিজের কথা চিন্তা করে সবাইকে খেজুর রস ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন।
আমরা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে খেজুর গাছ কেটে ফেলছি। এতে করে এক সময় খেজুর গাছের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। এজন্য আমাদের বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপন করতে হবে যাতে করে আমরা এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারি।
আপনার মতামত লিখুন :