Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মেহেরপুরে লাল শাকের বীজ উৎপাদনে নিরব বিপ্লব


দৈনিক পরিবার | মাহাবুল ইসলাম, মেহেরপুর প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম মেহেরপুরে লাল শাকের বীজ উৎপাদনে নিরব বিপ্লব

সবজি খ্যাত মেহেরপুর জেলা। জেলায় বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদিত হলেও শাকের বীজ উৎপাদনে পাল্টে গেছে অনেক কৃষকের ভাগ্য। বদলে গেছে গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র। একসময় শুধু ইরি বোরো, আমন ধান ও গম চাষের পাশাপাশি কিছু প্রচলিত শাক-সবজি চাষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল তাদের কৃষিকাজ। কিন্তু এখন আধুনিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের লাল শাক আবাদ করে তা থেকে বীজ উৎপাদন করে কৃষকরা লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। ধানের জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে লাল শাকের বীজ উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য এলাকার কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। কৃষকদের কাছে এখন শাক বীজ উৎপাদন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অল্প সময়ে স্বল্প পুঁজিতে বেশি লাভ করা যায় বলেই শাকের বীজ উৎপাদনে মনোযোগী হয়েছেন এখানকার কৃষকরা। এ কারণে মেহেরপুরের সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলায় শাকের বীজ উৎপাদনে নিরব বিপ্লব ঘটেছে। 
মেহেরপুরের হরিরামপুর, গোভীপুর, দফরপুর, শ্যামপুর, উত্তর শালিকা, বেলতলা পাড়া, কালিগাংনী, সাহারবাটী, কাথুলী, হিজলবাড়ীয়া, নওপাড়া, লক্ষীনারায়নপুর, হিন্দা ও সাহারবাটিসহ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জমিতে ফুলকপি, পাতাকপি, কলমি শাক, পালং শাক ও লাল শাকের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় এবং মনে হয় এলাকার মাঠগুলো যেন সবুজের বুকে লাল আবুর। 
গত কয়েকবছর ধরে লাল শাক থেকে বীজ উৎপাদন করে থাকেন এমনই একজন চায়ান উদ্দীন। তার বাড়ি মেহেরপুর সদর উপজেলার হরিরামপুর গ্রামে। হরিরামপুর উত্তর মাঠে ৪ বিঘা জমিতে আরএম জাতের লাল শাকের আবাদসহ কয়েক বিঘা জমিতে রয়েছে অন্যান্য আবাদ। 
চায়ান উদ্দীন জানান, তিনি গত ৪ বছর ধরে লাল শাকের বীজ উৎপাদন করে আসছেন। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বোনা, সেচ, কীটনাশক, নিড়ানি থেকে শেষ অবধি বীজ উৎপাদন করতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হলেও তা বিক্রি করে মাত্র ৩ মাসের আবাদে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন তিনি। আগামীতে লাল শাকের বীজ উৎপাদনে আরও বেশি জমিতে এ আবাদ করবেন বলে জানান।
তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগের কোনরূপ পরামর্শ ও সহযোগিতা ছাড়াই তার এ সাফল্য। জেলার অধিকাংশ এলাকায় এখন বিষ পাতা তামাকের চাষ শুরু হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে তা চাষে নিরুৎসাহিত করা হলেও বিকল্প চাষ হিসেবে লাল শাক থেকে বীজ উৎপাদনে পরামর্শ দেওয়া হলে অধিকাংশ কৃষক বীজ উৎপাদন করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হবেন বলে তিনি মনে করেন।
একই গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, আমাদের এলাকায় ধান ছাড়া আর কোন ফসল না হলেও গত কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে সঠিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হলে এলাকার শতশত কৃষক চায়ান উদ্দীনের মতো লাল শাক থেকে বীজ উৎপাদন ছাড়াও বিভিন্ন সবজি উৎপাদনে মেহেরপুরকে এগিয়ে নিতে পারে।

Side banner