লিচুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে সবুজ পাতার ফাঁকে উকি দিচ্ছে লিচুর সবুজ গুটি। এরই মধ্যে বাগান বেচাকেনায় সাড়াও পড়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা যাচ্ছেন দিনাজপুরে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশে পড়তে হয়নি লিচু চাষিদের। ১৩ এপ্রিল যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তা লিচু চাষিদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাই লিচু চাষিরাও স্বপ্ন দেখছেন যতটুকু গুটি এসেছে তা ভালোভাবেই উৎপাদিত হবে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে এবার হাজার কোটি টাকার লিচু উৎপাদন হবে। তবে বেসরকারি হিসেবে লিচু উৎপাদন হবে দ্বিগুণ। যার মূল্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনাজপুরের বিভিন্ন বাগানে, প্রতিটি বাড়ির বসতভিটায় বা আঙ্গিনার লিচু গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লিচুর গুটি।
সদর উপজেলার লিচু চাষি হাসান আলী বলেন, এবার মুকুল কম হলেও যতটুকু মুকুল এসেছিল তাতে গুটি ভালো হয়েছে। গত দুদিন আগে বৃষ্টিও হয়েছে। যা লিচুর জন্য উপকার হয়েছে। এবার অনেক বেশি ব্যবসায়ী বাগান কেনার জন্য এসেছেন।
বিরল উপজেলার লিচু চাষি হায়দার আলী জানান, প্রথম দফায় লিচু বাগান বেচা হয়ে গেছে। আরেকটা হবে লিচু পাক ধরার সময়। লিচুর গুটি ভালো হয়েছে। তবে চায়না থ্রির ফলন কম হবে। দিনাজপুরের লিচুর মধ্যে চায়না থ্রি, বেদেনা, বোম্বাই, মাদ্রাজি ও কাঁঠালি উল্লেখযোগ্য।
চিরিরবন্দর উপজেলা লিচু বাগানের মালিক খলিলুর রহমান বলেন, গত দুই-তিন বছর থেকে চায়না থ্রি লিচুর ফলন কম হচ্ছে। এবার নেই বললেই চলে। বাড়ির সামনে কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেছি।
বোচাগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর চাতইল ইউনিয়নের বনহড়া গ্রামের লিচু বাগানের মালিক শাহ সুলতান আব্দুর রহমান বলেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় লিচুর গুটি ভালো এসেছে। গত দুই বছর পর এবার আগাম বাগান বিক্রি করতে পেরেছি।
কাহারোল উপজেলার লিচু বাগানের মালিক যীদন চন্দ্র শীল জানান, আবহাওয়া এখনো অনুকূলে। গাছে গুটি আসার পর গত দুদিন আগে বৃষ্টি হয়েছে। আশা করি গাছে যতটুকু গুটি এসেছে যদি এগুলো ঠিক থাকে তাহলে ফলন ভালো পাবো।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. আনিছুজ্জামান জানান, চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোন সময় কোন কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরে দিনাজপুর জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। যা ওজনের আকারে ৩৫ হাজার টন। বাজার মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকারও বেশি।
আপনার মতামত লিখুন :