রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় সুস্বাদু হানি কুইন জাতের আনারসের জন্য বিখ্যাত হলেও সেখানকার কৃষকরা এখন পড়েছেন চরম বিপাকে। হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে পাহাড়ি এলাকায় আগাম ব্যাপক হানি কুইন আনারস ফলন ভালো হলেও বাজারে চাহিদা না থাকায় হতাশ সেখানকার চাষীরা। ফলে বাগানেই পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে পাকা হানি কুইন আনারস।
রাঙামাটি জেলায় সাধারন জায়েন্ট কিউ ও হানি কুইন নামের দু’জাতের আনারস চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে হানি কুইন জাতের আনারস বেশি চাষ হয়ে থাকে এই জেলায়। বিশেষ করে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর, লংগদু, বাঘাইছড়ি ও বরকলসহ বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে এবছর ব্যাপক হারে হরমোন প্রয়োগ করে আগাম হানি কুইন জাতের আনারসের ফলন হয়েছে। মূলত মে-জুন মাসে আনারস বাজারে আসলেও এবার জানুয়ারি থেকে আনারস বাজার আসতে শুরু করেছে।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিশেষ পদ্ধতিতে হরমোন ব্যবহার করে সারা বছর উৎপাদন হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল এই জাতের আনারস। আকারে বড়, স্বাদে মিষ্টি হলেও বাজারে এই আনারসের ক্রেতা নেই। দাম কমে যাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।
কৃষক ও বিক্রেতা জানান, বিভিন্ন উপজেলায় উৎপাদিত আনারস কৃষকরা ইঞ্জিন বোটে করে রাঙ্গামাটি শহরের সমতাঘাট, তবলছড়ি, পৌর ট্রাক টার্মিনাল এবং রির্জাভ বাজারে নিয়ে আসছে এবং সেখান থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে ট্রাকে করে জেলার বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে এই আনারসের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। সঠিক দাম না পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে কৃষক ও বিক্রেতাদের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের কারণে দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বাগানে ফল পেকে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বিক্রি করছেন কৃষকরা। আর আমরা কৃষকদের থেকে বাগান কিনে নেয়ার কারণে দাম কম হলেও বিক্রি করতে হচ্ছে। আর সঠিক দাম না পাওয়ায় গুনতে হচ্ছে অনেক টাকা।
রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক নাসিম হায়দার জানান, বাজারে চাহিদার প্রেক্ষিতে কৃষকরা আগাম ফল আনার জন্য কিছু হরমোন জাতীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। এসব কারণে বাজারে আগাম আনারস আসতে শুরু করেছে। তবে শীতের কারণে আনারসের মিষ্টির পরিমাণ কম হওয়ায় চাহিদাও কম। তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে যেমন উৎপাদন বাড়তে তেমনি বাজারে চড়া দামে বিক্রি করতে পারবে।
তিনি আরও জানান, এবার রাঙামাটির নানিরারচরে ১ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে আগাম ফলনশীল আনারস হানি কুইনের চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমা০ত্রা ৭ হাজার মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রার বেশি ফলনের আশা কৃষি বিভাগের।
কৃষকরা এখন সরকারের কাছে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য সল্প সুদে ঋণের পাশাপাশি উৎপাদিত পচনশীল পণ্য যাতে ঠিক সময়ে কৃষকরা বাজারজাত করতে পারে তার জন্য রাঙামাটি শহরে একটি হিমাগার স্থাপনের দাবি জানিয়েছে কৃষকরা।
আপনার মতামত লিখুন :