Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ও আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক


দৈনিক পরিবার | মো. মারুফ হোসেন লিয়ন জানুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ও আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সৈয়দপুরে গত কয়েকদিন থেকে হঠাৎ বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়া বইছে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা আকাশে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে কমছে না শীতের তীব্রতা। এ কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন আলু ও বোরো বীজতলা চাষিরা। ক্ষেতের আলু ও বীজতলা রক্ষায় প্রতিদিনই ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, গত কয়েকদিন ধরে সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। সেই সঙ্গে কুয়াশা ও ঠাণ্ডা অব্যাহত রয়েছে। 
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, সৈয়দপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৩২৯ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে। শুরুতে ১৯৮ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু উৎপাদন করা হয়। শুক্রবার সরেজমিনে উপজেলার কামারপুকুর, বাঙ্গালীপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করছেন। উপজেলার পৌরসভার কয়া কিসামত পাড়ার কৃষক আকতার রহমান নিজের পাঁচ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করছেন। লোক লাগিয়ে ওই জমিতে ছত্রাকনাশক ছিটাচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, হিয়াল (ঠান্ডা) কুয়াশায় আলুর গাছে কোকরা লাগেছে। বাধ্য হয়ে ভুইবাড়িত (ক্ষেত) স্প্রে করিবার লাগেছে। এই সময় ভুইবাড়িত দাওয়া (স্প্রে) না ছিটাইলে আলু পচি বরবাদ হইবে।
উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার কৃষক মতিয়ার রহমান (৫৫) বলেন, চার বিঘা জমির আলু গাইরছি ব্যাহে। কিন্তু কুয়াশা হামাক ডেনডারাত (সমস্যায়) ফেলাইছে ব্যাহে। পেতেক দিন স্প্রে করিবার লাগেছে। চারদিন ধরি সূর্যের মুখও দেখা যায়নি। 
কৃষকরা জানান, আলু মৌসুমে বীজআলু ১০০ টাকা কেজি হিসেবে কিনে জমিতে লাগানো হয়েছে। কুয়াশা ও শীতে এবার ঘন ঘন স্প্রে করার কারণে প্রতিকেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২৫ টাকা আর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮/২০ টাকায়। দু-একদিনের মধ্যে কুয়াশা কেটে না গেলে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হবে। 
কামারপুকুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আশা জানান, কুয়াশার কারণে আলু ও বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আলুর ক্ষতি ঠেকাতে কৃষকদের ছত্রাকনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বোরো বীজতলা পলিথিনে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, গত বছর আলুর চাহিদা বেশি ছিল। সে তুলনায় জোগান ছিল কম। তাই ভালো দাম পেয়েছে কৃষক। গতবারের দেখাদেখি এবার আবাদ বাড়িয়ে বিপদে পড়েছেন চাষিরা।

Side banner