খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম বলেছেন, ইঁদুর কৃষকের উৎপাদিত ফসল নষ্ট করে। আবার মানুষের বিভিন্ন রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে। আমরা ইঁদুর দমনে সফল হলে তা কৃষিক্ষেত্রে একটি বড় সফলতা বয়ে আনবে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইঁদুর দমনের বিকল্প নেই। তবে ইঁদুর দমনের ক্ষেত্রে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়গুলো বেশি করে কাজে লাগাতে হবে। ইঁদুরকে যেমন খাদ্যশস্য নষ্টের সুযোগ করে দেওয়া যাবে না, তেমনি আমরা নিজেরাও খাদ্যের অপচয় করবো না।
মাসব্যাপী জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযানের উদ্বোধন এবং বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনাসভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে খুলনার দৌলতপুরস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ববক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযানে এবারের প্রতিপাদ্য ‘ছাত্র-শিক্ষক-কৃষক ভাই, ইঁদুর দমনে সহযোগিতা চাই’ এবং বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ‘উন্নত জীবন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যের অধিকার’।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইঁদুর নামক প্রাণিটি মানুষ ও পশুপাখির প্লেগ, জন্ডিস, টাইফয়েড, চর্মরোগ, আমাশয়, জ্বর, কৃমিসহ প্রায় ৬০ প্রকার রোগ-জীবাণুর বাহক ও বিস্তারকারী। প্রজননের মাধ্যমে একজোড়া ইঁদুর একবছরে প্রায় তিন হাজার ইঁদুরে পরিণত হতে পারে। দেশে উৎপাদিত আমন ধানের শতকরা পাঁচ থেকে সাত শতাংশ ইঁদুর নষ্ট করে। গমের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ১২ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। সব মিলিয়ে একক প্রাণি হিসেবে ইঁদুর দেশের সাত লাখ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য নষ্ট করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) তাছলিমা আক্তার ও কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চল এবং মেট্রোপলিটন কৃষি অফিস যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সভা শেষে ইঁদুর দমনের ক্ষেত্রে সফল প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সনদপত্র ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এর আগে দিবসটি উপলক্ষ্যে অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ের চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।
আপনার মতামত লিখুন :